SEZ ও একটি বাংলা উপন্যাস ‘বন্দর’, ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘বন্দর’
সত্তর দশকের কথাকার ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের (জন্ম—১৯৪৮) আখ্যানের পটভূমির প্রতি দৃষ্টি দিলে লক্ষ করা যাবে, দক্ষিণবঙ্গ প্রধানত দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার খাল-বিল-নদীনালা-সমুদ্র’র সঙ্গে লেখকের আখ্যানের নিবিড় যোগ। সাহিত্যিক ভগীরথ মিশ্রের ভাষায়—
‘আমার বন্ধুদের মধ্যে যাঁরা দক্ষিণ ২৪ পরগণার সুন্দরবন অঞ্চলের জীবনকে কথাসাহিত্যে উজ্জ্বল করে এঁকে চলেছেন।….দক্ষিণ ২৪ পরগণা এলাকার কৃষক আন্দোলন, তেভাগা ও মেহনতি মানুষের হাজারো লড়াইয়ের কথায় তাঁর কলম সদাই সোচ্চার।’1
মেহনতি মানুষের জীবন-জীবিকার সমস্যা নিয়ে লেখক ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায় লিখলেন তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘বন্দর’ (১৯৯২)। দক্ষিণবঙ্গের সমুদ্রের কাছাকাছি হুগলি নদী-সংলগ্ন একটি এলাকায় অবাধ বাণিজ্যের কেন্দ্র গড়ে তোলার সরকারি প্রকল্প গ্রহণের সঙ্গে-সঙ্গে সেই এলাকায় জমি-মানুষের সম্পর্ক, নদী-জমির সম্পর্ক কিভাবে দ্রুত বদলে যায় তার কাহিনি বিবৃত করেছেন লেখক তাঁর নিজস্ব কথন-ভঙ্গিতে। উপন্যাসের ভরকেন্দ্রে রয়েছে বৃহত্তর স্বার্থে সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে জমি-অধিগ্রহণ এবং ফলশ্রুতিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবন-জীবিকা সংক্রান্ত উদ্ভূত সমস্যার প্রতিফলন। লেখক আলোচ্য আখ্যানে গভীর সমাজবাস্তবতার পরিচয় দিয়েছেন। লেখক স্বয়ং সরকারি আধিকারিক হওয়ায় উদ্ভূত সমস্যার গভীরে আলোকপাত করতে পেরেছেন, তুলে এনেছেন মানবিক প্রতিচ্ছবি। উপন্যাসের নিবিড়-পাঠে লক্ষ করা যাবে—নদী-তীরবর্তী একটি জনপদ কিভাবে দ্রুত বদলে যাচ্ছে, তাদের জীবনচর্যা কিভাবে প্রভাবিত হচ্ছে সমকালিক কিছু ঘটনার দ্বারা কিংবা জীবিকার তাগিদে একটা জনপদের মানুষজন পশ্চাদপৎ থেকে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ‘বন্দর’ উপন্যাসে একটি মুক্ত বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠার ফলে বঞ্চিত, বাস্তুচ্যুত একটি জনপদের কথা উঠে এসেছে।

পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট আমলে শিল্পায়নের জন্য বড়ো আকারের জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল ১৯৮১ সালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার ফলতা অঞ্চলে। প্রথমে ১৯৬০ একর এবং পরে ৭০০ একর বাস্তু ও কৃষিজমি অধিগ্রহণ করে গড়ে তোলা হয়েছিল বহুল প্রচারিত ফলতা মুক্তবাণিজ্য উন্নয়নকেন্দ্র (Falta Free Trade Zone)। যদিও সরকারি ভাষ্যে এই জমি অধিগ্রহণের পরিমাণ অনেক কম ছিল।2 ফলতা ব্লকের অকালমেঘ, শিমূলবেড়িয়া, নৈনান প্রভৃতি মৌজা অধিগ্রহণ করে এই ‘ফ্রি ট্রেড জোন’ গড়ে তোলার প্রকল্প গৃহীত হয়েছিল। এবং পার্শ্ববর্তী গোপালপুর মৌজার ৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করে গড়ে তোলা হয়েছিল ‘হাইল্যান্ড কলোনি’, গৃহহারা পরিবারগুলির একমাত্র আশ্রয়স্থল।
উপন্যাসে ‘কলতা’ (ফলতা) অঞ্চলের কাঁকালমেঘ (অকালমেঘ), শীতলবেড় (শিমূলবেড়িয়া), মৈনান (নৈনান), মিষড়া (বিশরা), সারাগঞ্জ (তারাগঞ্জ), নেপালপুর (গোপালপুর)—প্রভৃতি মৌজাগুলি আখ্যানে স্থান পেয়েছে এবং বাস্তবিক এখানকার বসবাসকারী মানুষগুলি মুক্তাঞ্চল নির্মাণে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।
ফলতা-সংলগ্ন অঞ্চলে নদীর চড়া পড়ে জাহাজ চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি হওয়ায় ‘কোলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট’ অনেক আগেই কাঁকালমেঘ মৌজা অধিগ্রহণ করে সেখানে নদীর বালি ফেলেছিল; সকলের কাছে সেই মাঠ পরিচিতি পেয়েছিল সি.পি.টি.-র মাঠ হিসেবে। পাহাড়-সমান উঁচু সেই মাঠ ভাঙতে গিয়ে ছাগল ব্যাপারি বিনোদ কাঞ্জির ‘বুকের ভিতরটা মুচড়ে যায় ! গাছগুলো সুরথ কয়ালের বাস্তু-ভিটের সাক্ষী। সুরথেরা শিয়ালদা ইস্টেশনে শুয়ে ভিখ মেগে দিন কাটায়। তাদের গাছপালা গলা অব্দি মাটি ঢাকা পড়ে দম নিচ্ছে। আর মানুষগুলো যে কোথায় উঠে গেছে……।’ 3 সুরথের মতো এই মৌজার অন্যান্য মানুষগুলো বাস্তুচ্যুত হয়ে জীবিকার খোঁজে চলে যায় অন্য কোথাও। যদিও ঝুমরি, হরিপদরদের মতো পঁচিশ ঘর থেকে যায় অধিকৃত মৌজায়। কিন্তু যখন মুক্তাঞ্চল নির্মাণের লক্ষ্যে দ্বিতীয়বার শীতলবেড়সহ কয়েকটি মৌজা সরকার অধিগ্রহণ করে, তখন হরিপদরা দেশভাগের কারণে ছিন্নমূল হওয়া ‘কলোনির পার্টি’দের থেকে নিজেদের তফাৎ করতে পারে না। অর্থাৎ জমি অধিগ্রহণের কারণে বাস্তুহারা মানুষগুলি যেন মাতৃভূমি হারানোর যন্ত্রনায় কাতর হয়।
ফলতা বাণিজ্যকেন্দ্র নির্মাণের প্রসঙ্গে এসে পরে জীবিকা-চিত্র—শুধুই যে জীবিকার সংকট উপস্থাপিত হয়েছে তাই নয়, জীবিকার নতুন নতুন ক্ষেত্রও প্রস্তুত হয়েছে। শীতলবেড়ের জুব্বার কিংবা ঝুমরিদের মতো পশুচরানি বৃত্তিই যেখানে জীবনধারণের একমাত্র উপায়, সেখানে উন্মুক্ত চারণভূমির অভাব যে তাদের শঙ্কিত করবে তা বলাই বাহুল্য। একসময় সি.পি.টি.র মাঠে জুব্বারের কৃষিজমি ছিল, সেই মাঠে এখন সে ছাগল চরায়। আবার সেখানে কারখানা গড়ে উঠলে, তাদের জীবিকার ক্ষেত্র স্বাভাবিকভাবেই সংকুচিত হবে। এক্ষেত্রে জুব্বার কিংবা ঝুমরিদের ‘হাইল্যান্ড কলোনি’তে পুনর্বাসন হলেও ‘জীবিকার পুনর্বাসন’ অধরাই থেকে যায়। এবং এখানেই সরকারি প্রকল্পের সীমাবদ্ধতার প্রসঙ্গ এসে পরে। মৈনানের জেলেপাড়ায় সরকারি আই.আর.ডি.পি. প্রকল্পের মেশিন বোট দেওয়ার কথা এসেছে। কিন্তু গির্জার ফাদার ও বিডিও সাহেবের কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে শহুরে সংস্কৃতির আগ্রাসন। অনেক জেলেই যে মাছ ধরতে নদীতে যেতে চায় না, তার কারণ “বোরডম। এক ঘেয়েমি। কতদিন আর নদীতে থাকতে ভালো লাগে। শহরের মজায় আটকে গেছে।” 4 তবে শুধুই শহুরে সংস্কৃতির আগ্রাসন নয়, নদীতে মাছের পরিমাণ ক্রমশ কমে যাওয়া 5 কিংবা মাছের যথাযথ মূল্য না পাওয়াও অন্যতম কারণ। লতিফ শেখ নৌকায় প্যাসেঞ্জার বহন করে। প্রযুক্তির উন্নয়নে এখন লঞ্চ সেই স্থান দখল করেছে। লতিফের ভাবনায়, “সারাদিনে কেউ ওপারের প্যাসেঞ্জার নেই। সব গিলে নিচ্ছে পাশের লঞ্চটা…। এখন লঞ্চের বেলায়? কোনো হিসেবপত্তর নেই। যত পারো মানুষ মালপত্তর ঠাসো।” 6 এখানে জীবিকা সংকটের খণ্ড চিত্রের সমবায়ে পাঠকের বুঝতে অসবিধা হয় না জীবিকা সমস্যার প্রকৃত অবস্থাকে উপলব্ধি করতে।

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে শুধু জীবিকার সংকটই উপস্থিত হয় নি, অনেক নতুন নতুন জীবিকা-ক্ষেত্রও প্রস্তুত হয়েছিল ‘কলতা’ অঞ্চলে জমি অধিগ্রহণ-কেন্দ্রিক পরিস্থিতিতে। মুক্ত-বাণিজ্যাঞ্চল নির্মাণে প্রাথমিকভাবে সেখানে প্রয়োজন পরে ল্যান্ড ডেভলপমেন্ট। এবং সেক্ষেত্রে রাস্তা নির্মাণসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রচুর মজুরের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে তা স্বাভাবিক। শীতলবেড়, কাঁকালমেঘ, গড় কলোনি প্রভৃতি জায়গার অনেকেই সেই মজুরের কাজে যুক্ত হয়েছিল; অনেকসময় তারা ঠিকাদারদের কাছে নিজেদের কাজের দাবি জানিয়ে সংঘবদ্ধও হয়েছিল। অন্যদিকে বিনোদ কাঞ্জির মতো স্বল্পশিক্ষিত, সামান্যকিছু পুঁজির মালিক, তারা ছোটোখাটো ঠিকেদারির কাজে নেমে পড়েছিল। একসময়ের ছাগল-ব্যাপারি ‘বিনোদ পাঁঠা’ হয়ে উঠলো বিনোদ ঠিকাদার।
একইভাবে সেবা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা শীতলবেড়ের নুরুল এবং যাত্রাদলের হরিপদ তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজে যুক্ত হয়েছে। তে-মাথানির মোড়ে নতুন চায়ের দোকান খুলেছে পয়মাল। এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের কারণে এই অঞ্চলে মানুষের সমাগম ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে পয়মালের দোকানে বিক্রি বেড়েছে। যেসব মৌজা এস.ই.জেড. নির্মাণের জন্যে অধিকৃত হয়েছে, সেই মৌজা থেকেই লেবার সংগ্রহের জন্য দাবি উঠেছে। গড়ে উঠেছে লেবার ইউনিয়ন। সংগঠনে নাম লিখিয়ে তারা নিজেদের দাবি আদায়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে। লতিফ শেখ নৌকায় ফেরি করা ছেড়ে চলে এসেছে ফ্রি-ট্রেড জোনে দালালি করতে। বিনোদ বুঝিয়েছে, সেখানে কাজের অভাব নেই।
জমি অধিগ্রহণ ও সরকারি ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গ এই উপন্যাসে বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। ‘হাইল্যাণ্ড’ কলোনি নির্মাণের জন্যে নেপালপুর মৌজার ৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। ফলে এই অঞ্চলের জমিহারারা ক্ষতিপূরণের টাকা হাতে না পেয়ে জমি ছাড়তে চায় না। শিক্ষিত ছেলেরা সরকারি আধিকারিকদের কাছ থেকে চাকরির আশ্বাস পেতে চায়। যদিও বুড়ি খালিদা বিবির জমি হারানোর যন্ত্রণা সবকিছুকে ছাপিয়ে যায়,
‘ওই যে ছি পি টি-র মাঠ দেখতিছিস—ঐ কাদা ফেলা মাঠ হওয়ার আগে, ওই মাঠে আমাদের পনেরো বিঘে জমি ছ্যালো..বছর ফিরলে বিঘে ভুঁই আট দশ মণ ধান, খেয়ে মেখে ফুরোত নি—বেচে বাপের বাড়ি যেতুম! সেও তো তোরা নে-নিলি গাঙের মাটি ফেলাবি বলে। এখন ছেলেপুলে নে পেটের জ্বালায় জ্বালুন গুড়োই—কনটোলে পায়রার খাবার খাই। ছেলেরা আনলে তাদের বেটাপুতের মুখে দেয় কী আর আমাকে দেয় কী….’ 7
কিছুক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে জমিহারারা। কৃষিলোন পেয়েছিল এমন কৃষকেরা যারা ঋণ শোধে ব্যর্থ হয়েছে, ব্যাঙ্ক তাদের ক্ষতিপূরণ আটকে দেবার আবেদন জানিয়েছে সরকারের কাছে। জমি যাদের থাকবে না, তাদের কৃষিলোন শোধ হবে কীভাবে—সরকারের নিয়ম-নীতি এক্ষেত্রে শিথিল না হলে বঞ্চিত হবে অনেকেই। স্থানীয় পঞ্চায়েতের ভূমিকা এক্ষেত্রে সদর্থক হওয়া জরুরি। তবে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সরকারের সিদ্ধান্তের পক্ষে। প্রধান, উপপ্রধানরা বাস্তুহারা হরিপদ, সৃষ্টিধরদের সান্ত্বনা দেয় রিলিফের খাদ্যশস্য, তেরপলিন জোগানোর।
বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ ফলতা সংলগ্ন কয়েকটি মৌজা। এখানকার বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ হারাচ্ছে তাদের জীবিকার ক্ষেত্র, গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে অন্য জীবিকা। পরিবর্তনে স্রোতে গা ভাসাতে না পারলে হারিয়ে যেতে হয়—এই চিরসত্য বিশেষ মাত্রায় আভাসিত হয়েছে এই আখ্যানে। একটি অঞ্চলে দু-দুবার জমি অধিগ্রহণে সেখানকার মানুষজনের জীবন-জীবিকার সম্পর্ক কীভাবে বদলে যায়, তা লক্ষ করা গেল। হরিপদ’র ভাবনার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার যায় সমস্ত বাস্তুহারাদের যন্ত্রণা—
‘কটা মানুষের পায়ের অবশ শব্দ। হরিপদর বুকের মধ্যে পিষে যায়। নিজেকেই শোনায়–, আর একটা কলোনি হল এই ত ! লোকে চেনাতে বোঝাতে বলবে—ওই-ই হাইল্যান্ড কলোনির….’ 8
বন্দর উপন্যাস (১৯৯২ খ্রি.), ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়
সূত্রনির্দেশ
- ভগীরথ মিশ্র, আমি ও আমার সময়ের গল্পকার বন্ধুরা, কোরক (সম্পা: তাপস ভৌমিক) শারদীয়া ১৪১২। পৃ—২২০-২১
- দ্র. চিত্তরঞ্জন দাশ, পশ্চিমবঙ্গের ভূমিসংস্কার ও কৃষি-অর্থনীতি, এম এল আর সি, কলকাতা, ২০১০। পৃ—১৫৭
- ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, বন্দর, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯২। পৃ—১৪
- ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, বন্দর, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯২। পৃ—২৬
- ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, বন্দর, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯২। পৃ—১২৯
- ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, বন্দর, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯২। পৃ—৯৯
- ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, বন্দর, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯২। পৃ—৬৭
- ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, বন্দর, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯৯২। পৃ—১৬০